জুবিলীর পুণ্য বর্ষে ঢাকা মহাধর্মপ্রদেশীয় যুব দিবস উদযাপন

গত ২৭ থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ খিস্টাব্দ, ঢাকা মহাধর্মপ্রদেশের অর্ন্তগত রমনা ক্যাথিড্রালে অনুষ্ঠিত হলো পুণ্য জুবিলী বর্ষের ঢাকা মহাধর্মপ্রদেশীয় যুব দিবস ।
এই যুব দিবসের মূলসুর ছিলো “আশার তীর্থযাত্রী যুবারা,গড়ি ন্যায়- শান্তির ধরা”। চার দিনের এই কার্যক্রমের মধ্যে যুব চেতনা আনয়নের লক্ষ্যে তাদের মানসিক, আধ্যাত্নিক, এবং নৈতিকতা ও মূল্যবোধ আরো প্রগাঢ়ভাবে গড়ে তোলার জন্য বিভিন্ন বিষয়ের উপরবিশিষ্ট ব্যাক্তিগণ সহোভাগিতা করেন।
উক্ত এই যুব দিবসের নির্ধারিত কার্যক্রমের মধ্যে ছিলো আগত সকল অংশগ্রহণকারীদের বরণ, লগো উন্মোচন, পতাকা উত্তোলন এবং যুব ক্রুশ স্থাপন ,বর্ণাঢ্য যুব র্যালী, এনিমেশন, সৃষ্টিশীল উপস্থাপনা , দলীয় কাজ ,উন্মোক্ত আলোচনা ,পবিত্র ক্রুশের আরাধনা, আলোর উৎসব ছাড়াও কাথলিক মন্ডলীর ধর্মশিক্ষা বিষয়ক ছাড়াও ছিলো আনুষঙ্গিক অনেক বিষয় ।
প্রথম দিনে পবিত্র খিস্টযাগ অর্পণ করেন ঢাকা মহাধর্মপ্রদেশের আর্চবিশপ বিজয় এন ডি‘ ক্রুজ। তিনি তার উপদেশ বাণীতে সকল যুবাদের জীবনে ন্যায় ও শান্তি চর্চা করার মধ্য দিয়ে সকলের মাঝে ন্যায় ও শান্তির আলোকবর্তিকা হয়ে উঠার আহবা্ন জানান।
দিনের প্রথম অধিবেশনে মূলসুরের উপর সহোভাগিতা করেন ফাদার স্ট্যানলী কস্তা । তিনি বলেন এই জুবিলী বর্ষে সারা পৃথিবীতে আশার তীর্থযাত্রী হিসেবে আমরা আধ্যাত্নিকভাবে যাত্রা করছি। তিনি সাধূ পৌলের পত্রের উপর সহোভাগিতা প্রাক্কালে বলেন যে আশা হলো একটি ঐশ্বতাত্ত্বিক গুন যা দ্বারা আমরা ঐশ্ব রাজ্যের বাসনা করি। এজন্য আমরা খ্রিস্টের প্রতিশ্রুতির উপর আমরা আস্থা রাখি। তাই তোমরা যুবা ভাই ও বোনেরা তোমরা খ্রিস্টের উপর আশা ভরসা রাখো যেন তিনি তোমাদের সকল আধ্যাত্নিক গুনে ভরিয়ে তোলেন।

এছাড়া যুবাদের ক্যারিয়ার নিদের্শনা ও পাবলিক রিলেশনের উপর সহোভাগিতা করেন মিস্টার টনি মাইকেল গমেজ । তিনি যুবাদের জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে আলোকপাত করতে গিয়ে বলেন এখনই তোমাদের উপযুক্ত সময় নিজের ভবিষ্যত জীবন সমন্ধে চিন্তা করার।
তবে জীবনকে সুন্দরভাবে গোছানোর পূর্বে তোমাকে নিজেকে সঠিকভাবে গড়ে উঠতে হবে।সময়ের মূল্য দিতে হবে। অনেক জ্ঞান অর্জন করতে হবে, আধুনিক প্রযুক্তির যথাযথো ব্যবহার শিখতে হবে, যেন যে কোন পরিস্থিতে তুমি নিজের ক্যারিয়ার গঠন করতে পারো , বলেন মিস্টার টনি গমেজ।
যুবাদের মানসিক চাপ মোকাবেলা এ বিষয়ে সহোভাগিতা করেন সিস্টার গ্লোরিয়া এমপিডিএ । তিনি বলেন, বর্তমানে যুবা থেকে বৃদ্ধ পযর্ন্ত সবাই কোন কোন ভাবে মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ি। তবে এ থেকে মোকাবেলা করতে হলো আত্নমূল্যায়ন করতে হবে। বিজ্ঞ ব্যাক্তিদের স্মরণাপন্ন হতে হবে।
উক্ত এই যুব দিবসে সমাপণী খ্রিস্টযাগ অর্পণ করেন ঢাকা মহা ধর্মপ্রধেশের আর্চবিশপ বিজয় এন ডি‘ ক্রুজ ওএমআই। সর্হোপিতো করেন ঢাকা মহাধর্মপ্রদেশের যুব সমন্বয়কারী ফাদার প্রলয় আগষ্টিন ক্রুশ এবং ফাদার লিয়ন রোজারিও সহ কয়েকজন ফাদার ।
বিশপ বলেন সারা বছরের নানান যুব কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে এবং আনুষ্ঠানিক কার্যক্রমের বাইরে ও তোমাদের আলোর বিকিরণ অব্যাহত রাখো। খ্রীষ্টিয় মুল্যবোধের কারনে তোমরা যেন ন্যায় , শান্তি, ভালোবাসা ও আনন্দ চিত্তে জীবন পথে এগিয়ে যাও তোমরা নিজেরা যুবা এবং অন্য যুবাদের জীবনের জন্য ও আশার আলো হও।
অংশগ্রহণকারী মৌমিতা দাশ তার অনুভূতি ব্যক্ত করে বলে যে, এই যুব দিবসে অংশগ্রহণ করতে পেরে আমি অনেক আনন্দিত। অনেক বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করেছি যা আমার জীবন গঠনের জন্য অনেক প্রয়োজন । আমি যা শিখেছি তা আমার সহপাঠিদের সাথে সহোভাগিতা করব। এবং আরো অনেককে এধরনের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করার অনুপ্রেরণা দিবো।
উল্লেখ্য উক্ত এই যুব দিবসে বিভিন্ন ধর্মপল্লী থেকে আগত প্রায় ৩৫০ থেকে ৪০০ জন অংশগ্রহণকারী এবং কয়েকজন ফাদার সিস্টার উপস্থিত ছিলেন।– আরভিএ সংবাদ